শিরোনাম
🇨🇦 “উত্তরের আকাশে গর্বের ডানা”: এয়ার কানাডার বিস্ময়কর উত্থান ও বৈশ্বিক অভিযাত্রা
দুবাই নয়, শারজাহ থেকেই বৈপ্লবিক উড্ডয়ন! মধ্যপ্রাচ্যের বিস্ময় এয়ার অ্যারাবিয়া
নভোএয়ার: আকাশে নির্ভরতার প্রতীক, চ্যালেঞ্জের মুখে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ঢাকা-টোকিও রুট বন্ধের সিদ্ধান্ত: বাণিজ্যিক ব্যর্থতা নাকি পরিকল্পনার ঘাটতি?
সালাউদ্দিন তানভীর: এনসিপি নেতা থেকে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত
মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে দ্রুতগতির উত্থান: Flynas-এর সাফল্যের গল্প
উত্থান-পতনের গল্পে কারা এগিয়ে?
দুই দশকের পর মুনাফায় ফিরলো PIA: পাকিস্তানের আকাশপথে নতুন দিগন্তের সূচনা
ভুটানের আকাশপথে নিরব অথচ দৃঢ় এক অভিযাত্রা: Drukair – Royal Bhutan Airlines

উত্থান-পতনের গল্পে কারা এগিয়ে?

দুই প্রতিবেশী দেশের জাতীয় এয়ারলাইন্স হলেও Pakistan International Airlines (PIA) ও Biman Bangladesh Airlines-এর মাঝে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। ইতিহাস, আধুনিকীকরণ, পরিচালনা, আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা—সব দিক থেকেই এই দুই সংস্থার গতিপথ এক নয়। একদিকে যেমন PIA-এর রয়েছে একসময়ের গৌরবময় অতীত, অন্যদিকে Biman এখনও নিজেকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দেওয়ার সংগ্রামে লিপ্ত।

ইতিহাস ও উত্থান: PIA প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালে (পূর্বে Orient Airways নামে), যা ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের জাতীয় বিমান সংস্থায় পরিণত হয়। ষাটের দশকে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক এয়ারলাইন ছিল PIA। তারা প্রথম এশিয়ান এয়ারলাইন হিসেবে জেট বিমান চালু করে এবং Lufthansa, Emirates-এর মতো এয়ারলাইনকে সাহায্য করেছিল তাদের শুরুর পর্যায়ে।

অপরদিকে, Biman প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই। দেশের গর্ব হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও, শুরু থেকেই এর যাত্রা ছিল বাধাসঙ্কুল। প্রথমদিকে DC-3 এবং Fokker বিমান দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটেই সীমাবদ্ধ ছিল বিমানের কার্যক্রম।

পরিচালনাগত পার্থক্য: PIA দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বাজেটনির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। দুর্নীতি, আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিষ্ঠানটি আজ প্রায় দেউলিয়া অবস্থায়। বর্তমানে তাদের বহরে মাত্র ২৫টি সক্রিয় বিমান, তার অনেকগুলোই বয়স্ক এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে আন্তর্জাতিক রুটে নিষিদ্ধ।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যদিও সরকারের মালিকানাধীন, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু অগ্রগতি করেছে। নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার যুক্ত হয়েছে বহরে, আন্তর্জাতিক রুট বেড়েছে, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার দিক থেকেও উন্নতি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নিরাপত্তা: PIA ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে, কারণ তাদের অনেক পাইলটের লাইসেন্স ভুয়া প্রমাণিত হয়েছিল। আজও সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল। বিমানের পক্ষ থেকে এমন কোনো বড় ধরনের স্ক্যান্ডাল বা অনিয়ম সাম্প্রতিক কালে সামনে আসেনি, যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কিছুটা সুনাম অর্জনে সাহায্য করেছে।

আর্থিক দিক ও টিকাটি: PIA প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার ক্ষতি করে, এবং সরকারের ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল। বিমানও লাভজনক বলা যায় না, তবে সঠিক ব্যবস্থাপনায় এটি অন্তত স্থিতিশীল অবস্থানে আছে এবং মাঝে মাঝে মুনাফাও করে।

সংক্ষেপে পার্থক্য:

ইতিহাসে গৌরবময়: PIA

বর্তমানে আধুনিক ও স্থিতিশীল: Biman

আন্তর্জাতিক রুটে নিষিদ্ধ: PIA

নতুন প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা মানে উন্নয়ন: Biman

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে জর্জরিত: PIA

নিয়ন্ত্রিত কিন্তু উন্নয়নের পথে: Biman

এ বিষয়ে এডিটরস মেইলকে বলেন এক অভিজ্ঞ পাইলট, “PIA একসময় দক্ষিণ এশিয়ার গর্ব ছিল। এখন তারা ইতিহাসের ভারে ভেঙে পড়ছে। আর Biman ধীরে ধীরে হলেও এগোচ্ছে—তবে সৎ নিয়ন্ত্রণ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রাখতে হবে।”

দুই দেশের এই দুই জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের যাত্রাপথ যেন একটিই গল্প বলে—সফলতার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, আধুনিকীকরণ এবং দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থাপনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top